বাসস: গোপালগঞ্জে এ বছর সনাতান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় পূজা ১ হাজার ৩০১ মন্ডপে উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে ।
বিপুল উৎসাহ, উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পূজা উদযাপনে পুলিশ ও প্রশাসন পূজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দ ও মন্ডপ কমিটিরি সদস্যদের সাথে মত বিনিয়ম করছে । সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
মন্ডপগুলোতে চলছে সাজ-সজ্জা, সৌন্দর্য বর্ধন, আলোকসজ্জার কাজ। মূর্তি তৈরীর কাজ শেষ হয়েছে। কিছু কিছু মন্ডপে শুরু হয়েছে রংএর কাজ । জেলার সর্বত্রই পূজার আবহ সৃষ্টি হয়েছে।
আগামী ১৪ অক্টেবার মহালয়ের মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের সূচনা হবে। ২০ অক্টোবর পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। পূজা চলবে ৫দিন। ২৪ অক্টোবর বিসর্জণের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে এ বছর ঘটকে চরে দেবী দূর্গা মর্ত্য লোকে পদার্পন করবেন । আবার ঘটকেই কৈলাশে ফিরবেন। পূজার ৫দিনে দেবীর প্রতি ভক্তিপূর্ণ অর্ঘ নিবেদন করা হয়ে। ঢাক-ঢোল, শংখের ধ্বনিতে মন্ডপ মুখরিত হয়ে উঠবে।
ভক্ত, পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থী কৃপা লাভের আশায় দেবীর চরণে ভক্তিপূর্ণ অঞ্জলী নিবেদন করবেন । মন্ডপগুলোতে দেবী দুর্গার পাশাপাশি মহাভারত ও রামায়নের পৌরানিক কাহিনী ফুঁটিয়ে তোলা হয়েছে। কোন কোন মন্ডপে পট চিত্রে ভোলা মহেশ্বরের কৈলাশ পর্বত ও শারদীয় দুর্গোৎসবের আনন্দঘন শরৎকালকে চিত্রায়ন করা হয়েছে । সব বয়সের দর্শনার্থী টানতে মন্ডপগুলোতে দেবী দুর্গার ভূবনমোহিনী রূপ উপস্থাপন করা হয়েছে ।
জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানাগছে, এ বছর গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩৫১টি, কোটালীপাড়া উপজেলায় ৩২৫টি, মুকসুদপুর উপজেলায় ২৯৯টি, কাশিয়ানী উপজেলায় ২৩২টি ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৯৪টি মন্ডপে পূজার প্রস্তুতি চলছে । এ নিয়ে জেলায় এ বছর ১ হাজার ৩০১টি মন্ডপে উৎসব মুখর পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
গোপালগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ আশ্রাফুল হক বলেন, এ বছর জেলার ১ হাজার ৩০১টি পূজা মন্ডপে ভক্তদের প্রসাদ বিতরণের নিমিত্তে চাল বরাদ্দের জন্য দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা অধিদপ্তরের কাছে মন্ডপের তালিকা পাঠানো হয়েছে। চাল বরাদ্দ পাওয়া মাত্র আমরা মন্দির কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মারফত বিতরণ শুরু করব। শেষ মুহুর্তে পূজা মন্ডপের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও ওই কর্মকর্তা ইঙ্গিত দেন ।
গোপালগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. অসিত কুমার মল্লিক বলেন, এ জেলা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গর্বিত জেলা। এখানে জন্ম গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জেলার টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ নির্বাচনী এলাকা। তাই আওয়ামী লীগের এ ঘাঁটিতে যুগ-যুগ ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রয়েছে। এখানে উৎসব মুখর পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে । এ বছর শহর ও গ্রামের পূজাগুলো জাক-জমক পূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সে ধরণের প্রস্তুতি চলছে মন্ডপে-মন্ডপে ।
গোপালগঞ্জ শহরের নিউ মডেল সংঘের পূজা মন্ডপের পূজা আয়োজন কমিটির সদস্য তুষার কান্তি বিশ্বাস বলেন, এ বছর উৎসব মুখর পরিবেশে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে। মন্ডপে, মন্ডপে মূর্তি তৈরীর কাজ শেষ হয়েছে। ২-১ দিনের মধ্যে আমাদের মন্ডপে রং এর কাজ শুরু হবে। এখন মন্ডপ সজ্জা, সড়ক ডেকোরেশন, আলোকসজ্জা, গেট নির্মাণ ও সৌন্দর্য বর্ধণের কাজ পুরো দমে চলছে। মন্ডপগুলোকে দৃষ্টিনন্দন করতে প্রতিটি মন্ডপ কমিটি সাধ্যমতো চেষ্টা করছে। শেষ পর্যন্ত এখানে বর্নাঢ্য আয়োজনে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।